মানুষের দ্বিপদ গমন কীভাবে ঘটে?

দুটি পায়ের সাহায্যে মানুষের গমন পদ্ধতিকে দ্বিপদ গমন বলে। দ্বিপদ গমন মানুষকে বিবর্তনের সর্বোচ্চ ধাপে উন্নীত করেছে।

দ্বিপদ গমনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান যাদের পারস্পরিক সমন্বয়ে দ্বিপদ গমন ঘটে-

(i) অস্থি ও অস্থিসন্ধি

(ii) পেশি (সরেখ)

(iii) লিগামেন্ট ও টেন্ডন

(iv) লঘুমস্তিষ্ক ও অন্তঃকর্ণ

(i) অস্থিসন্ধি : সচল অস্থিসন্ধিগুলি হলো—

• বল ও সকেট সন্ধি – শ্রোণিচর (Pelvic girdle ও ফিমার-এর মধ্যে)।
• কবজা সন্ধি (Hinge joint) – ফিমার ও টিবিয়া ফিবুলার মধ্যে। স্লাইডিং সন্ধি – গোড়ালির সন্ধি (Ankle joint)।

(ii) পেশি : সরেখ পেশিগুলি হলো—

• ফ্লেক্মর – হাতে ও পায়ে দেখা যায়। দুটি অস্থিকে কাছাকাছি আনে। যেমন – বাইসেপস্।
• এক্সটেসার – হাতে ও পায়ে দেখা যায়। অস্থিগুলিকে দুরে সরিয়ে দেয়। যেমন – ট্রাইসেপস্।
• অ্যাডাকটর – অস্থি বা দেহাংশকে দেহের অক্ষ থেকে দুরে সরিয়ে নিয়ে যায়। যেমন- ডেলটয়েড পেশি।
• অ্যাডাটর – অস্থি বা দেহাংশকে দেহের অক্ষ বরাবর নিয়ে আসে।যেমন – ল্যাটিসিমাস্ ডরসি।

(iii) লিগামেন্ট ও টেনডন :

• লিগামেন্ট – যোগকলা যা দুটি অস্থিকে যুক্ত করে।
• টেনডন – যোগকলা যা অস্থি ও পেশিকে যুক্ত করে।

(iv) লঘুমস্তিষ্ক ও অন্তঃকর্ণ

• লঘুমস্তিদ্ধ – সেরিবেলাম অংশটি দেহের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে পেশিকলা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে।
• অন্তঃকর্ণ → অর্ধচন্দ্রাকৃতি নালী → ভেস্টিবুলার স্নায়ু।

পদ্ধতি :

গমনকালে পেশিগুলির সংকোচনের ফলে গমনোদ্যত পায়ের গোড়ালি গমনতল থেকে ওপরে ওঠে, হাঁটু ভাঁজ হয়। দেহের ভার অপর পায়ে চলে যাওয়ায় দেহের ভরকেন্দ্র (যা সাধারণত দুপায়ের মধ্যে অক্ষরেখায় থাকে) সামনে এগিয়ে যায়।

ভারসাম্য রক্ষার জন্য গমনোদ্যত পা মাটি থেকে ওপরে ওঠে এবং আন্দোলিত হয়ে নীচে নামে। প্রথমে গোড়ালি

গমনতল স্পর্শ করে, পরে পায়ের পাতা। এই ঘটনা পর্যায়ক্রমে চলে। সেরিবেলাম ও অস্তঃকর্ণ ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণে অংশগ্রহণ করে।

ডান পায়ের সঙ্গে বাঁহাত ও বাপায়ের সঙ্গে ডান হাত এগিয়ে চলে।

মানুষের দ্বিপদ গমন কীভাবে ঘটে?